—ফারহানা জাহান
৩১তম বিসিএস পরীক্ষায় (প্রশাসন)
প্রথম
কোনো বিকল্প নেই; আটঘাট বেঁধেই
শুরু করতে হবে দেশের সবচেয়ে বড়
পাবলিক পরীক্ষা বিসিএসের জন্য
প্রস্তুতি। বিসিএস পরীক্ষা বেশ দীর্ঘ
প্রক্রিয়া। প্রথমেই মুখোমুখি হতে হয়
প্রিলিমিনারি পরীক্ষার। বাংলা,
ইংরেজি, সাধারণ জ্ঞান, দৈনন্দিন
বিজ্ঞান ও গণিত—এই বিষয়গুলোর ওপর
সাধারণত প্রশ্ন
হয়ে থাকে প্রিলিমিনারি
পরীক্ষায়। অনেকেই হতাশ হয়ে যান
এই ভেবে যে এই পরীক্ষার
তো কোনো নির্দিষ্ট সিলেবাস
নেই। আমি বলব, হতাশ না হয়ে একটু
বুদ্ধি খাটিয়ে পড়াশোনা করলেই
ভালো ফল করা যায়। এ জন্য
যেটা করতে হবে তা হলো,
আপনি যে বিষয় ভালো জানেন,
সেই বিষয়ের ওপর জোর দিন। যেমন
আপনার যদি গণিতে ভালো দখল
থাকে, তবে আপনার লক্ষ্য হওয়া উচিত
গণিতের সব কটি সঠিক উত্তর
দেওয়ার। ফলে অন্য
বিষয়ে নম্বরঘাটতি এই বিষয়ের
বেশি নম্বর
আপনাকে প্রতিযোগিতায়
টিকিয়ে রাখবে।
এবার আসা যাক বিষয়ভিত্তিক
প্রস্তুতিতে।
বাংলা বিষয়ে ভালো করতে হলে
সাহিত্যিকদের জীবন এবং তাঁর
সৃষ্টিকর্মের ওপর ভালো দখল
তৈরি করতে হবে। এ জন্য
আপনাকে সাহায্য
করতে পারে মাধ্যমিক পর্যায়ের
বাংলা বইগুলো। আর ব্যাকরণের জন্য
পড়া যেতে পারে নবম-দশম শ্রেণীর
বাংলা ব্যাকরণ পাঠ্যবই।
ইংরেজিতে ভয়েজ, টেন্স,
ন্যারেশন, প্রিপোজিশন,
অ্যানালজি, সিনোনিম-অ্যান্টনিম,
ফ্রেজ—এই বিষয়গুলোর ওপর জোর
দিতে হবে এখন থেকেই। গণিতের
প্রস্তুতির জন্য
পড়া যেতে পারে ১৯৯৮ সালের
আগের সিলেবাসের নবম ও দশম
শ্রেণীর গণিত বই। আর বীজগণিত
সমাধানের জন্য সাহায্য করবে এ
সময়ের অষ্টম ও নবম-দশম শ্রেণীর গণিত
বই।
আর যে বিষয়টি অবশ্যই
মনে রাখতে হবে তা হলো, সঠিক
উত্তর নিশ্চিত
না হয়ে কোনো প্রশ্নের উত্তর
করা যাবে না। কেননা, ভুল উত্তরের
জন্য নম্বর কাটা যাবে।
এই বিষয়গুলো মাথায়
রেখে প্রস্তুতি শুরু করুন আজ থেকেই।
সফলতা আসবেই।
লিখিত পরীক্ষা
চাই সময়ের সঠিক ব্যবহার
—জিনাত মহল
৩০তম বিসিএস পরীক্ষায় (অর্থনীতি)
প্রথম
সময়ের সঠিক ব্যবহারই লিখিত
প্রস্তুতির প্রধান সহায়ক। তাই এখন
থেকেই সময় আলাদা করে নিন
প্রতিটি বিষয়ের প্রস্তুতির জন্য।
বিসিএসে তিনটি পরীক্ষার মধ্যে শুধু
লিখিত পরীক্ষার সুনির্দিষ্ট
সিলেবাস আছে। তাই
তুলনামুলকভাবে লিখিত পরীক্ষার
প্রস্তুতি নেওয়া সহজ। এ জন্য অনুসরণ করুন
পাবলিক সার্ভিস কমিশনের
দেওয়া সিলেবাস এবং বিগত
বছরগুলোর প্রশ্নপত্র।
লিখিত পরীক্ষায় সুনির্দিষ্ট তথ্যের
ভিত্তিতে যিনি যত সুস্পষ্ট উত্তর
লিখতে পারবেন, তিনি তত
বেশি নম্বর পাবেন। এ
ক্ষেত্রে প্রশ্নের উত্তর বড় হতেই
হবে এমন কোনো ধরাবাঁধা নিয়ম
নেই।
লিখিত পরীক্ষার বিষয়গুলোর
মধ্যে বাংলার সিলেবাসই
তুলনামূলক বড়। বাংলার জন্য
পড়তে পারেন নবম-দশম শ্রেণীর
বাংলা বই থেকে লেখক
পরিচিতি অংশটা। দখল
থাকতে হবে বিখ্যাত লেখকদের
সৃষ্টিকর্মের ওপর।
পাশাপাশি আপনাকে জানতে হবে
বাংলা সাহিত্যের ‘যুগ’ সম্পর্কে।
সেই সঙ্গে ব্যাকরণও খুব গুরুত্বপূর্ণ।
‘ফ্রি হ্যান্ড’ লেখার ক্ষমতা যাঁর
যতো বেশি তিনি ইংরেজিতে
ততো ভালো করবেন। লেখার সময়
কঠিন শব্দের ব্যবহার কম করাই ভালো।
এ ছাড়া গ্রামার
অংশে প্রিলিমিনারি পরীক্ষায়
যা পড়তে হয় এখানেও তা-ই
পড়তে হবে।
বাংলাদেশ বিষয়বলির জন্য গুরুত্বপূর্ণ
হলো সংবিধানে বিভিন্ন ধারা,
বাংলাদেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্য।
আর আন্তর্জাতিক বিষয়াবলির জন্য
বিভিন্ন দেশের চুক্তি ও যুদ্ধ।
গণিত বিষয়ে প্রিলিমিনারি ও
লিখিত পরীক্ষার জন্য
প্রস্তুতি একইভাবে।
তবে একটা কথা বলা দরকার, গণিত
কিন্তু নিয়মিত চর্চার বিষয়। তাই
নিয়মিত চর্চা অব্যাহত রাখুন।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ের
প্রস্তুতির জন্য কাজে লাগবে নবম-দশম
শ্রেণীর পদার্থবিজ্ঞান,
জীববিজ্ঞান এবং কম্পিউটার
পাঠ্যবইটি। এ ছাড়া সমসাময়িক
সময়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির নতুন
আবিষ্কারগুলো সম্পর্কে ধারণা
রাখতে হবে।
মৌখিক পরীক্ষা
নির্দিষ্ট বিষয়ে স্বচ্ছ ধারণা রাখুন
—সুশান্ত পাল
৩০তম বিসিএস পরীক্ষায় (কাস্টমস)
প্রথম
মৌখিক
পরীক্ষা নিয়ে একটা কথা বেশ
প্রচলিত। এই পরীক্ষায়
নাকি ভালো করার অন্তত
১০০টি উপায় আছে, যেগুলোর একটাও
ভাইভা বোর্ডে কাজে আসে না!
তাই বলে কি প্রস্তুতি ছাড়াই
পরীক্ষা দিতে যাবেন?
‘সেটা উচিত হবে না’—সচেতন
ব্যক্তিমাত্রই আপনার উত্তর হবে এটা।
তাই ভাইভা সম্পর্কে কিছু বিষয় অন্তত
মাথায় রাখতেই হয়। যেমন—
পরীক্ষকের চোখে চোখ
রেখে কথা বলুন।
সিভিল সার্ভিস, আপনার পাঠ্য বিষয়,
ক্যাডারের প্রথম ও দ্বিতীয় পছন্দের
বিষয় সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা রাখুন।
ইংরেজিতে কথোপকথনের চর্চা করুন।
তবে এমন কারও সঙ্গে নয়, যে শুধু ভুলই
ধরিয়ে দেয়।
আত্মবিশ্বাস ভেঙে দেয়
কিংবা আপনাকে আপনার
মতো থাকতে দেয় না, এমন কিছু
শুনবেন না, করবেন না।
যাঁরা বোঝেন না, তাঁরাই বলেন
বেশি। বাড়িয়েও বলেন। তাঁদের
পরামর্শ এড়িয়ে চলুন। ‘ভুল’ বোঝার
চেয়ে না বোঝা ভালো।
এই
কদিনে নিজেকে বদলাতে যাবেন
না। পারবেনও না। সেই
পুরোনো ‘আমি’টাকেই
সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে শিখুন।
কী কী পড়বেন, সেটা ঠিক করার
চেয়ে বেশি জরুরি হচ্ছে কী কী বাদ
দিয়ে পড়বেন, সেটা ঠিক করা।
পরীক্ষার অন্তত এক সপ্তাহ
আগে থেকে একাধিক দৈনিক
পত্রিকায় নিয়মিত চোখ রাখুন।
নিজেকে উৎসাহী শ্রোতা
হিসেবে উপস্থাপন করুন। মৌখিক
পরীক্ষায় বেশি সময় রাখলেই
বেশি নম্বর পাবেন, এ ধারণা বোধ হয়
ভুল। আমি ছিলাম চার-পাঁচ মিনিট।
ইতিবাচক আচরণ, মানসিক পরিপক্বতা,
উপস্থিত বুদ্ধি, সুনির্দিষ্ট বিষয়ের
ওপর স্বচ্ছ ধারণা—এই
ব্যাপারগুলো আয়ত্তে রাখুন।
সবশেষে বলি, সাফল্য কখনোই
ধরা দেয় না, সাফল্য অর্জন করতে হয়।
অতএব, নিজের ওপর আস্থা রাখুন। লক্ষ্য
অনুযায়ী কাজ করুন। সাফল্য
ধরা না দিয়ে পারবেই না।
শুক্রবার, ৩ জানুয়ারী, ২০১৪
বিসিএস পরীক্ষা বিষয়ে কিছু পরামর্শ.
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন